এডিস মশার নিয়ন্ত্রণ ও ডেঙ্গু রোগের বিস্তার রোধে সম্মিলিতভাবে ঢাকাবাসীকে এগিয়ে আসতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। বুধবার (২২ জুন) বিকালে ডিআরইউ’র নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ঢাকা ইউটিলিটি রিপোটার্স এ্যাসোসিয়েশন (ডুরা) আয়োজিত “ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ: আমাদের করণীয়” শীর্ষক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এ কথা বলেন। ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে জনগণকে আরও সচেতন হতে হবে, তাদেরকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনকে সহযোগিতা করতে হবে। আমরা প্রস্তুত সকল উপাদান নিয়ে, সকল অস্ত্র নিয়ে, সকল সরঞ্জাম নিয়ে, জনগণ নিয়ে এবং সবচেয়ে বড় কথা নিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধ নিয়েও আমরা প্রস্তুত। আমরা যেকোন সময়ের চেয়ে সবচেয়ে ভালো এবং সুষ্ঠুভাবে মশক নিয়ন্ত্রণ করতে চাই। কিন্তু সকলের ঐক্যবদ্ধ সহযোগিতা, সচেতনতা এবং সম্মিলিত সহায়তা না পেলে আমাদের এই কার্যক্রম আসলেই অনেক দুরূহ হয়ে যাবে। তাই, ডেঙ্গু রোগের বিস্তার রোধে সম্মিলিতভাবে ঢাকাবাসীকে এগিয়ে আসতে হবে।” এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার গ্লানি নয় বরং ঢাকাবাসীকে সুফল দিতে চায় উল্লেখ করে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “আমরা কোন ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে যেতে চাই না। কারণ আমরা জানি — আমরা দৃঢ়তার সাথে, নিষ্ঠার সাথে কাজ করে চলেছি এবং কাজ করে যেতে চাই। সুতরাং আমাদের আবেদন, আপনারা নিজ দায়িত্বে এডিস মশার উৎসস্থলগুলো ধ্বংস করুন। সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদেরকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করুন। তাহলে সকলে মিলে আমরা ডেঙ্গু রোগ এবং এডিস মশাকে প্রতিরোধ করতে পারব।” এ সময় রাত ৮টার পর দোকানপাট, বিপনি-বিতানসহ অন্যান্য বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধে কেন্দ্রীয় সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, “আজকের এই মুহূর্তে ঢাকা শহরের একিউআই ২০। মানে ঢাকার পরিবেশ এখন চমৎকার। কারণ, আমরা ঢাকা শহরকে বিশ্রাম দেওয়া আরম্ভ করেছি।” আলোচনায় অংশ নিয়ে ইনস্টিটিউট ফর প্লানিং এন্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, “বিশ্বে যত মহামারী সৃষ্টি হয়েছে সেসব মহামারীর অন্যতম কারণ হলো নগরায়ন। একইভাবে ডেঙ্গু রোগের মূল কারণও নগরায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন। যে কারণে সিঙ্গাপুরের মতো দেশেও ডেঙ্গুর প্রকোপ অনেক বেশি।” ড. আদিল মুহাম্মদ খান আরও বলেন, “সেবায় কোথাও বিঘ্ন ঘটলে আমরা নগরপিতাদের বকাঝকা করি। কিন্তু নগরপিতাগণ কত মানুষকে সেবা দেবেন? সেটাও সুনির্দিষ্ট হতে হবে। উনি কি ১ কোটি, দেড় কোটি, ২ কোটি নাকি সাড়ে ৩ কোটি মানুষকে সেবা দেবেন? নগরীতে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা সুনির্দিষ্ট না হলে যতই পরিকল্পনা করা হোক না কেন তা কাজে আসবে না।” সংলাপ আয়োজনে কীটতত্ত্ববিদ ও গবেষক অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এ সময় তিনি বলেন, “কীটনাশক দিয়ে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। উৎস নিধনই এডিস মশক নিয়ন্ত্রণের সর্বোত্তম ও কার্যকর পদ্ধতি। সেটা আমাদেরকেই নিশ্চিত করতে হবে।” ডুরা’র ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জয়শ্রী ভাদুড়ীর সঞ্চালনায় এবং সভাপতি মো. রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) মো. নাজমুল ইসলাম ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির বক্তব্য রাখেন।
Leave a Reply